G.11. বন্যপ্রাণীদের সুরক্ষার জন্য কি কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে? লুপ্তপ্রায় মাছদের রক্ষার জন্য কি কি ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে? 2.5+ 2.5=5
এখানে আমি বিস্তারিত আলোচনা করে দিলাম। তোমরা প্রয়োজন মত ছোট বড় করে নেবে
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের ব্যবস্থাসমূহ -
সাধারণত বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য নিম্নলিখিত ব্যবস্থাগুলি গ্রহণ করা হয়—
1. বাসস্থান ব্যবস্থাপনা—বন্যপ্রাণীদের স্বভাব ও বাসস্থান সম্পর্কে বাস্তুতান্ত্রিক তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে তাদের প্রতিরক্ষা, সংরক্ষণ, বাসস্থানের উন্নতিসাধন ইত্যাদি করা হয়। এর জন্য প্রজাতিদের বিভিন্ন পরিসংখ্যানগত তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ এবং সংরক্ষিত করা হয়।
2. বন্যপ্রাণীদের জন্য সংরক্ষিত স্থান স্থাপন—বিভিন্ন সংরক্ষিত স্থান, যথা—জাতীয় উদ্যান, বায়ােস্ফিয়ার রিজার্ভ, স্যাংচুয়ারি, পশুশালা ইত্যাদি স্থাপনের ফলে নানা প্রকার উদ্দেশ্য সাধিত হয়, যথা—
(i) প্রাকৃতিক বা কৃত্রিম বন্য পরিবেশে প্রাণীদের সংরক্ষিত করা সম্ভব হয়।
(i) বৈজ্ঞানিক, শিক্ষামূলক এবং বিনােদনমূলক সুবিধা প্রদান।
(i) পর্যটক আকর্ষণের মাধ্যমে রাজস্বের আয় বৃদ্ধি, ইত্যাদি।
3. আবদ্ধ স্থানে প্রজনন-- সংরক্ষিত স্থানে নিরাপত্তা, খাদ্যের সুবিধা ইত্যাদির কারণে জীবেদের প্রজনন সম্পাদিত হয় এবং এইভাবে লুপ্তপ্রায় অনেক প্রজাতির সংখ্যাবৃদ্ধি করা সম্ভব হয়েছে। ভারতের বিভিন্ন অরণ্যে বাঘ সিংহ ইত্যাদি, পােল্যান্ডের জাতীয় উদ্যানের ইউরােপিয়ান বাইসন ইত্যাদি প্রাণীদের এইভাবে সংখ্যাবৃদ্ধি ঘটানাে সম্ভব হয়েছে।
4. পুনঃপ্রবর্তন- লুপ্তপ্রায় কিছু প্রাণী, যথা—আরবের ওরিক্স, রাশিয়ার অ্যান্টোলাপ, ব্ল্যাক বাক্, ফ্লেমিংগো ইত্যাদি প্রাণীদের কৃত্রিম আবদ্ধ স্থানে প্রজনন সম্পাদনের মাধ্যমে যথেষ্ট সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটার পর স্বাভাবিক বাসস্থান অর্থাৎ বিভিন্ন জাতীয় উদ্যান, অভয়ারণ্য ইত্যাদি স্থানে সুষ্ঠুভাবে পুনঃপ্রবর্তিত করা (reintroduction) সম্ভব হয়েছে।
5. বন্যপ্রাণীদের সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ—সংরক্ষিত স্থানের বিভিন্ন অঞ্চলে পর্যবেক্ষণ টাওয়ার গঠনের মাধ্যমে বনকর্মীরা—প্রাণীদের শারীরিক অবস্থা, বনাঞ্চলে আগুন লাগা ইত্যাদি ঘটনা সম্পর্কে লক্ষ্য রাখেন। এবং প্রয়ােজনমত তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। পর্যটনকারীরাও ঐ টাওয়ার থেকে প্রাণীদের লক্ষ্য করতে পারেন।
| Watch tower |
6. রােগ প্রতিরােধক ব্যবস্থা—কোন কারণে বন্যপ্রাণীদের রােগ বা মহামারী জাতীয় কিছু হলে তার প্রতিকারের যথাযােগ্য ব্যবস্থা থাকা প্রয়ােজন।
7. জনবসতি স্থানান্তরকরণ—বন্যপ্রাণীদের সংরক্ষিত স্থানে অভ্যন্তরে জনবসতি যা বাঞ্ছনীয় নয় , এরূপ ক্ষেত্রে জনবসতি স্থানান্তরিত করতে পারলে ভালো হয়।
8. উপযুক্ত খাদ্য ও জলের ব্যবস্থা—প্রাণীরা যাতে সঠিক খাদ্য ও জল পায় সেদিকে লক্ষ্য করা দরকার।
9. জনশিক্ষা—বন ও বন্যপ্রাণীর বিলুপ্তি সাধিত হলে যে পরিনামে মানুষের ক্ষতি হবে, সে সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করা প্রয়ােজন।
10. আইন প্রণয়ন—বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন আবশ্যক। ভারতের বন্যপ্রাণী(সংরক্ষণ)আইন, 1972 এবং অন্যান্য আইনের ফলে হত্যা, শিকার, আবদ্ধকরণ, ক্ষতিসাধন গাছ কাটা ইত্যাদি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।


0 Comments